ঢাকা শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

বল্লামুখার বেড়িবাঁধ নির্মাণে বিএসএফের বাধা

পরশুরাম সীমান্তে ফের উত্তেজনা 

পরশুরাম সীমান্তে ফের উত্তেজনা 

ফেনীর পরশুরাম উপজেলায় নিজকালিকাপুর সীমান্তে গত সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারী) রাতে সীমান্ত লাইট বন্ধ করে কয়েকটি বাঙ্কার খনন করেছে ভারতীয় বিএসএফ। মুহুরী নদী সংলগ্ন বল্লারমুখার বেড়িবাঁধ পুনর্নির্মাণে ফের বিজিবি এবং বিএসএফের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। তবে কাজ চলমান রাখার সিদ্ধান্ত দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা বাঁধ নির্মাণ কাজ চালু রেখেছে।

স্থানীয়রা বলেন, সোমবার রাতে সীমান্তে লাগানো লাইট বন্ধ করে ৫/৬টি বাঙ্কার খনন করেছে বিএসএফ। বল্লামুখার বাঁধের ৭০ মিটার অংশে ৩০ মিটার নোম্যান্সল্যান্ডে রয়েছে, এমন দাবি করে বিএসএফ বেঁড়িবাঁধ পুনর্নির্মাণে শুরু থেকেই বার বার বাঁধা প্রদান করে যাচ্ছে।

মঙ্গলবার সকাল থেকে ভারতের ঈশানচন্দ্র নগর ও বাংলাদেশের নিজ কালিকাপুর ক্যাম্পের বিজিবি- বিএসএফ’র মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। বিজিবির পক্ষে মজুমদার হাট কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার আবদুর রশিদ নেতৃত্বে সেখানে বিজিবি সদস্যরা শক্ত অবস্থান নিয়েছেন।

কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার আবদুর রশিদ বলেন, সীমান্তের মিটিংয়ে অস্ত্র আনা আন্তর্জাতিক নিয়মের পরিপন্থি। বিজিবি সদস্যরা খালি হাতে যাশ। কিন্তু বিএসএফ অস্ত্র নিয়ে আসে। দেশের সীমানা রক্ষায় বিন্দু পরিমাণ ছাড় দিব না।

সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, ২০২৪ সালের আগস্টে দেশের অভ্যন্তরে ভারি বৃষ্টিপাত ও ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে ফেনী জেলার পরশুরাম, ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া, ফেনী সদরসহ বৃহত্তর নোয়াখালী ৯০ ভাগ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়।

স্মরণকালের ভয়াবহ ওই বন্যায় জেলার কয়েক লাখ মানুষ ঘরবাড়ি, ফসল ও সম্পদ হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়। বন্যায় মুহুরী কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর ১০২ টি স্থানের বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। যার মধ্যে মেরামত কাজ সম্পন্ন হয় ৯৬টি। এতে ব্যয় হয় ৯ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।

আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইনানুযায়ী শূন্যরেখা থেকে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখেই বাংলাদেশের অভ্যন্তর বাঁধ পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। তবে সেই বাধা উপেক্ষা করে কাজ চালিয়ে যেতে ঠিকাদারদের নির্দেশ দিয়েছে বিজিবি।এর আগে বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বল্লামুখার বাঁধ নির্মাণে বাঁধা প্রদান করে বিএসএফ।

স্থানীয়রা বলেন, বিএসএফ অস্ত্রের ভয় দেখাচ্ছে। কাজের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এ বাঁধ নির্মাণ না হলে আগামী বর্ষায় আবার ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। এসময় তারা বিজিবির সাহসী সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন এবং বিএসএফের আচারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বন্যা থেকে ফেনীকে বাঁচাতে টেকসই বাঁধের বিকল্প নেই। যতই বাধা আসুক এ বাঁধ নির্মাণ করতে হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, বল্লামুখা বাঁধ নোম্যান্সল্যান্ডের মধ্যে আছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড এ বিষয়ে বাধা আসতে পারে আশংকা করে আগেই বিজিবি-৪ ব্যাটেলিয়ন, কুমিল্লা সেক্টর ও যৌথ নদী কমিশনের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্য আলাপ করার জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে।

বিজিবির ফেনী ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোশাররফ হোসেন বলেন, বল্লারমুখে বাঁধ নির্মাণ চলমান আছে, তবে শূন্য লাইন থেকে ১৫০ গজের মধ্যে যেকোনো নতুন কাজ হলে দুই দেশের অনুমোদন প্রয়োজন , বর্ডার গাইড লাইন অনুযায়ী এখানে ৭০ মিটার কাজের মধ্যে ৩০ মিটার ১৫০ গজের মধ্যে পরেছে। যা নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দুই দেশের যৌথ নদী কমিশন এ সমন্বয় অব্যাহত আছে। অনুমোদন সাপেক্ষে কাজ সম্পন্ন হবে।বর্তমানে ৪০ মিটারে কাজ চলমান আছে। যা ১৫০ গজের বাইরে। ৩০ মিটার কাজের বিষয়ে যৌথ নদী কমিশন অনুমোদন অপেক্ষায় আছে।

উত্তেজনা,সীমান্ত
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত